বাউফল সংবাদদাতা :
পটুয়াখালীর বাউফলে নাজিরপুর ছোট ডালিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়ার ৪১ মাস পর এক শিক্ষিকার পুনরায় যোগদানকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করা হয়েছে এবং এ অনিয়মকে ঢাকতে কিছু সাংবাদিক শিক্ষিকার পক্ষে সুপারিশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদেন মাসুমা বেগম। ২০১২ সালের ১ নভেম্বর তিনি এমপিওভুক্ত হন। অভিযোগ রয়েছে, চাকরির শুরু থেকে তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এলেও নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করতেন, যা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার রেজ্যুলেশনে উল্লেখ রয়েছে।

পরবর্তীতে শারীরিক অক্ষমতার কথা উল্লেখ করে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ তিনি স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন এবং ব্যবস্থাপনা কমিটি তা অনুমোদন করে। এরপর প্রধান শিক্ষক এমপিও থেকে তার নাম কর্তনের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করলে তা গৃহীত হয়।
কিন্তু ৪১ মাস পর, ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট আবারও তিনি পূর্বের পদে যোগদান করেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠান প্রধানের সহযোগিতায় এ সময়ে ৪১ মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন মাসুমা বেগম। স্থানীয়রা বলছেন, পতিত সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের এপিএস মাহবুবুর রহমানের আপন বোন হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাবে এ অনিয়ম ঘটেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মী রাশিদুল ইসলাম ইজাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। 
অভিযোগের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের একটি তদন্ত কমিটি সোমবার (২৫ আগস্ট) বাউফলে তদন্তে আসে। তবে তদন্ত চলাকালে বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মো. শামিম আনোয়ারের ভাই ও এক অভিভাবক সদস্য অভিযোগকারী সংবাদকর্মীকে প্রকাশ্যে হুমকি দেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় তিনজন সাংবাদিক অভিযুক্ত শিক্ষিকার পক্ষে সুপারিশ করেছেন, যা তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ঘটনায় অভিযোগকারী সংবাদকর্মী রাতেই বাউফল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তিনি বলেন, “আমি কেবল ন্যায়বিচারের স্বার্থে অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। এখন আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
বাউফল থানার ওসি আক্তারুজ্জামান সরকার বলেন, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"